নিউজ ডেস্ক :: আজ বহুল প্রতীক্ষিত লাইলাতুল কদর তথা কদরের রাত। এ রাতে আল্লাহ পাকের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হয়। এ রাত এত বেশি ফজিলত ও বরকতময় যে, যার তুলনা তামাম মাখলুকাতের আর কোন কিছুর সাথে হয় না। এ রাতের সত্যায়নে সুরা কদর ছাড়াও সুরা দোখানে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,“হামীম, শপথ সুস্পষ্ট কিতাবের। আমি একে (কুরআন শরীফ) নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে, নিশ্চয় আমি সতর্ককারী। এ রাতে প্রত্যেক প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়। আমার পক্ষ থেকে আদেশক্রমে, আমিই প্রেরণকারী। আপনার পালনকর্তার পক্ষ হতে রহমত স্বরূপ। তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ”।
হাদিস শরীফে রেওয়ায়েত হয়েছে, “রাসুল (সা.)’র স্ত্রী উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা (রা.) একবার নবীজীর খেদমতে আরজ করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কদরের রাত তো মর্যাদার রাত। একটু বলেন কিভাবে এ রাতে প্রার্থনা করবো? জবাবে হুজুর (সা.) বলেন, হে আয়েশা, আল্লাহর দরবারে অশ্রু সজল নয়নে কায়মনোবাক্যে দোয়া করবে- “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন করীম, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা‘ফু আন্নি”- অর্থ হলো, হে আল্লাহ আপনি তো মহান ক্ষমাশীল, ক্ষমা করাকে পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করুন।
লাইলাতুল কদরের রাতে নফল নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দান-ছাদাকা, ওয়াজ-নছিহত, দরুদ শরীফ ইত্যাদি ইবাদতের মাধ্যমে পুরো রাত জেগে কাটাতে হবে। আল্লাহর কাছে অঝর নয়নে কান্না করে তাওবাহ-ইসতিগফারের মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিতে হবে। তবে সবসময়ের জন্য মনে রাখতে হবে, এ রাতের যাবতীয় ইবাদত কিন্তু সুন্নাত-নফল পর্যায়ের- এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কোন অবকাশ নেই।
আমাদের দেশে দেখা যায়, অনেকে এ রাতে আতশবাজি, আড্ডাবাজি ও শহরের অলিগলি ঘুরা ফেরা করে আমোদ-ফূর্তিতে সময় কাটায়, ঘরে ঘরে হালুয়া-রুটি ও হরেক রকমের খাবারের আয়োজন করা হয়, মসজিদ-মাজারে আলোকসজ্জা, কবর-মাজার ঘিরে মোমবাতি প্রজ্বলন, আগরবাতি জ্বালানো প্রভৃতি কর্মকাণ্ড চলে তা ইসলাম সমর্থন করে না। কারণ, এসবের অনেকগুলো শিরক- বেদআতের পর্যায়ে পড়ে। বস্তুতপক্ষে এসব বাহ্যিক আনুষ্ঠানিকতা লাইলাতুল কদরের মর্যাদার প্রতি চরম অবমাননার শামিল।
আসুন, অত্যন্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধা সহকারে সারারাত নফল ইবাদতের মাধ্যমে হাজার মাস থেকে শ্রেষ্ঠ রাত্রি লাইলাতুল কদরের ফজিলত অন্বেষণ করি। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের হৃদয়কে ইবাদতের প্রতি রুজু করে দিন। আমিন।
পাঠকের মতামত: